একটি খেলা যা,ইদানিং জনপ্রিয়তা লাভ করছে ধীরে ধীরে ,হ্যা , খেলাটির নাম “গল্ফ “বর্তমানে বিশ্বব্যাপী খুব জনপ্রিয় একটি খেলা। এটি সব বয়সী লোকেরা খেলতে পারে।পরিচ্ছন্ন এই খেলাটি পরিবারের সকলকে নিয়ে খেলা যায়, যদিও তা একটু ব্যয় বহুল এই খেলা স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। এই লেখায় আমরা গলফের নানান স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে জানবো।
একটি স্বাস্থ্যকর এবং সুন্দর জীবনযাপনের আকাঙ্ক্ষা প্রতিটি মানুষের। আর এটি অর্জনে রয়েছে বিভিন্ন উপায়। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে খেলাধুলা। মানসিক চাপ কমাতে সাহায্যকারী “গলফ” স্ট্রেসক মানোর একটি দুর্দান্ত উপায়।গলফ খেললে মস্তিষ্ক থেকে শক্তিশালী প্রাকৃতিক, মেজাজ বাড়ানোর হরমোননিসৃত হয়, যাকে বলা হয় এন্ডরফিন। এটি চাপ কমাতে বেশ উপকারী। বিশেষ করে যারা বয়স্ক তাদের মানসিক চাপ দূর করতে বেশ সাহায্য করে গলফ।
কেন না বার্ধক্যের সঙ্গে মানসিক সতর্কতা আরও দ্রুত হ্রাস পেতে শুরু করে। গলফ খেলা তাদের একাগ্রতাশক্তি এবং মানসিক তীক্ষ্ণতা অনুশীলনে সহায়তা করে। এটি তাদের মানসিক অসুস্থতা যে মনডিমেনশিয়াকে দূরে রাখে।
গল্ফের উদ্ভব নিয়ে প্রচুর বিতর্ক আছে।কোনো ঐতিহাসিকে মতে প্রাচীন রোমান খেলা পাগানিকা, যাতে অংশগ্রহণ কারীরা একটি বেঁকানো লাঠি দিয়ে চামড়ার বল মারতে হত, সেখান থেকে গল্ফের উদ্ভব। খৃষ্টপূর্ব প্রথমশতকে রোমানদের সাথে এই খেলা গোটা ইউরোপে ছড়িয়ে পড়েও আস্তে আস্তে আজকের গল্ফের চেহারায় রুপ নেয়।
অন্যদেরমতে, অষ্টমও চতুর্দশ শতাব্দীর মধ্যে চীনের চুইওয়ান “থেকেই এই খেলার সুত্রপাত “চুই” মানে মারাও “ওয়ান” মানে ছোটবল ,সেই খেলাই গল্ফের পূর্বসূরি।
মধ্য যুগে এই খেলা ইউরোপে আসে। ইংল্যান্ডের ক্যাম্বুকাবাফ্রান্সেরক্যাম্বট আর একটি প্রাচীন খেলা যার সাথে গল্ফের সাযুজ্য আছে। পরে এই খেলা “পেলমেল” নামে ছড়িয়ে পড়ে। কারো কারো মতে পারস্যের চুঘান থেকে গল্ফের সৃষ্টি। ওদিকে হল্যান্ডেরলোনেনে পঞ্চম ফ্লোরিসের খুনির ধরাপড়ার দিন টিমনে রাখতে কোল ভেননা মেবাঁকালা ঠিও বলের একটি বার্ষিক খেলা প্রচলিত ছিল ১২৯৭ সাল থেকে সেই খেলাটিরই আধুনিক রূপ হচ্ছে গল্ফ। তবে বহুল স্বীকৃত মত অনুযায়ী, আজকের গল্ফের উদ্ভব দ্বাদশ শতাব্দীতে স্কটল্যান্ডে।
সেখানে আজকের সেন্টঅ্যান্ড্রূজের পুরোনো মাঠে মেষ পালকেরা খরগোশের গর্তে পাথরলা ঠিদিয়ে মেরে ঢোকাতো।
গল্ফ একটি ইংরেজি শব্দ (Golf) ক্লাবও বলের একটিখেলা, যাতে খেলোয়াড়েরা ক্লাবের সাহায্যে বলটি কোন নির্দিষ্ট গর্তে (hole) এ ফেলার চেষ্টা করেন।গল্ফ খেলোয়াড়দের বলা হয় গল্ফার।
আর দশটি বলের খেলার মত গলফ মাঠের কোন নির্দিষ্ট আকৃতি থাকেনা। গল্ফ খেলা হয় খোলা মাঠে, যাকে গল্ফ কোর্স বলা হয়। একটি গলফ কোর্সে সাধারণত ৯ থেকে ১৮ টি গর্ত থাকে। প্রতিটি গর্তের জন্য একটি করে টিবক্স থাকে, যেখান থেকে খেলা শুরুহয়।
সুনির্দিষ্ট ক্রমানুসারে ১৮ টি গর্তে খেলে একটি গল্ফ খেলা সম্পূর্ণ হয়। যে গল্ফ ক্ষেত্রে ৯ টি গর্ত আছে সেখানে দুবার খেলা হয়।
একটি গর্তের জন্য খেলা শুরু হয় টি এলাকা থেকে গল্ফদন্ড দিয়ে বল মেরে।এই বল মারার সময় যদি বল অনেক দুরে মারতে হয় তখন অনেক সময় বল টিটি-এর উপর রাখা হয়।
গল্ফের একটি খেলা একক এবং দলগত দুইরকম ইহতে পারে। একক খেলায় যে খেলোয়াড় সবচেয়ে কম সংখ্যক আঘাতে বা stroke এ সকল গর্ত জয় করতে পারেন, তাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।এটি কেবলা হয় স্ট্রোকপ্লে (stroke play)।
অপর দিকে দলগত খেলাকে বলা হয় ম্যাচপ্লে (match play)যাতে সবচেয়ে বেশি গর্ত জয় করা দল বিজয়ী ঘোষিত হয়।
সুনির্দিষ্ট ক্রমানুসারে ১৮ টি গর্তে খেলে একটি গল্ফ খেলা সম্পূর্ণ হয়। যে গল্ফ ক্ষেত্রে ৯ টি গর্ত আছে সেখানে দুবার খেলা হয়। একটি গর্তের জন্য খেলা শুরু হয় টি-এলাকা থেকে গল্ফদন্ড দিয়ে বল মেরে।এই বল মারার সময় যদি বল অনেক দুরে মারতে হয় তখন অনেক সময় বল টিটি-এর উপর রাখাহয়। এই টি আসলে মোটাপেরেকের মত দেখতে, যা সাধারণতঃ কাঠের তৈরি হয়। অনেক সময় কিছুটা ঘাস বাধুলো জড়ো করেও বল উঁচু করা হয়, মারার সুবিধার্থে।
দুরের বল মারার জন্য লম্বা আর কাছে মারার জন্য সাধারণত ছোট দন্ডের ব্যবহার হয়। গল্ফার বল টি গর্তে ফেলার জন্য বল থামার পর যতবার খুশি মারতে পারেন। এই ধরনের মারগুলিকে লে আপ (lay-up), অ্যাপ্রোচ (approach), পিচ বা চিপ (chip) বলে।
বল সবুজ অঞ্চলে পৌঁছাবার পরের মারকে বলে পাট।গল্ফারের মূল লক্ষ্য থাকে যাবতীয় বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে যথা সম্ভব কমবার মেরে বলগর্তে ফেলা।
খেলোয়াড়েরা হেঁটে বা স্বয়ংক্রিয় যা নেচেপে মাঠে চলাচল করতে পারেন। একক বা দলবদ্ধ ভাবে বাক্যাডির সাথে খেলা যায়।ক্যাডি, গল্ফারের সরঞ্জামের দেখভাল করা ছাড়াও সংশ্লিষ্ট গল্ফারকে খেলা নিয়ে নানান উপদেশ দিতে পারেন।
গল্ফের নিয়ম কানুন নিয়ে কিছু আলোচনা করা যেতে পারে ,আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেয় R&A ও United States Golf Association (USGA)। সাধারণভাবে গল্ফখেলায় সততা ইমূলধন।
সরকারি নিয়মাবলীর পিছনের পাতায় যা লেখা আছে তা তর্জমা করলে দাঁড়ায়, “বল যেভাবে পড়ে আছে সেভাবে খেলুন, মাঠের গঠন অনুযায়ী খেলুন আর যদি তা না পারেন তো অন্ততঃ সৎভাবে খেলুন।”
একজন গল্ফারের পেশাদারিত্বের নিয়ম ভীষণ কড়া। যদি কোনো ব্যক্তি কখনো খেলা শেখানোর জন্য বা গল্ফ খেলার জন্য অর্থগ্রহণ করেছে তা হলে সেই ব্যক্তিকে পেশাদার বিবেচনা করা হবে ও তিনি আর কোনো অপেশাদার খেলায় অংশ নিতে পারবেন না।অপেশাদার গল্ফারেরা কখন কত মূল্যের পুরস্কার পাবেন তার সুনির্দিষ্ট নিয়ম আছে।
ছাপার অক্ষরের গল্ফের নিয়মাবলী ছাড়াও গল্ফারেরা আরও কিছু অলিখিত নিয়ম মেনে চলেন, যাকে গল্ফ এটি কে ট বলে। এই নিয়মগুলি সাধারণতঃ নিরাপত্তা, সততা, খেলার গতি বা মাঠের রক্ষণা বেক্ষণ সংক্রান্ত। এই নিয়ম মানা বাধ্যতামূলক না হলেও বৃহত্তর স্বার্থে সব গল্ফার এই নিয়মগুলি মেনে চলেন।
পেনাল্টিকি ? জানাদরকার।
গল্ফ খেলায় পেনাল্টি মানে একজন খেলোয়াড়ের বল মারার সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া। বল হারিয়ে ফেললে বা মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দিলে একটি মারও দুরত্বের পেনাল্টি হয় যা গল্ফ আইনের ধারা ২৭-১।
যদি খেলোয়াড়ের সরঞ্জাম বা আলগা ঘাস সরাতে গিয়ে বল সরে যায় তাহলে একটি মার পেনাল্টি হয় (ধারা১৮-২)।
যদি ভুল বল মারা হয় (ধারা১৯-২) বা অন্য গল্ফারের বল মারা হয় (ধারা১৯-৫)তাহলে আবার দুটি মার পেনাল্টি হয়। এছাড়া অসৎপন্থার জন্য খেলা থেকে বহিষ্কার পর্যন্ত হতে পারে। গল্ফ বল মারার জন্য গল্ফদন্ড লাগে। প্রতিটি দন্ডের এক প্রান্তে ধরার জন্য হাতল থাকে। আর অন্য প্রান্তে মারার জন্য মাথা থাকে। লম্বাদন্ডের ক্ষেত্রে মাথা দন্ডের সাথে প্রায় সমকোণে থাকে। ছোট দন্ডের ক্ষেত্রে এই কোণ কিছু বেশি হয়।
ড্রাইভারদন্ডটি সবচেয়ে বড়। এর থেকে একটু ছোট হল উড। ফেয়ারওয়েতে দীর্ঘদূরত্ব অতিক্রম করার জন্য ব্যবহৃত হয়।মজার ব্যপার হল, আজকাল উড তৈরি হয় ধাতু দিয়ে।
তাই আজকাল একে ফেয়ার ওয়েমেটাল- ওবলে।এর থেকেও ছোট মাপের দন্ডকে বলে আয়রন।
এর রকম ফের সবচেয়ে বেশি। হাইব্রিড দন্ডগুলি আবার উড সওআয়রনের উভয়ের ইগুণ সংবলিত হয়। তাই ক্রমশঃ জনপ্রিয় হচ্ছে। পাটার দন্ডগুলি ব্যবহৃত হয় সবুজ অঞ্চলে বল মেরে গর্তে ফেলার জন্য।
একজন খেলোয়াড় অনধিক ১৪ টি দন্ড একটি খেলায় ব্যবহার করতে পারে। দন্ডের পছন্দ খেলোয়াড়ের হলেও সেগুলি নিয়মানুসারে নির্মিত হতে হয়। নচেৎ খেলা থেকে বহিষ্কারের সম্ভাবনা থাকে।
গল্ফ বলের আকার গোলাকার, সাধারণতঃ সাদা (যদিও অন্যান্য রঙেরও হয়) এবং গায়ে অনেক ছোট ছোট টোলের মত গর্ত থাকে, যেগুলি বাতাসে ঘর্ষণ কমাতে সাহায্য করে যাতে বল উড়ে বেশি দুর যেতে পারে। বলটি কেটি শুধু মাত্রটি-এলাকা থেকে প্রথম বার মারার জন্য ব্যবহার হয়।
অনেক গল্ফার গল্ফের জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি গল্ফ জুতা ব্যবহার করেন। এই জুতার তলায় ধাতু বা প্লাস্টিকের তৈরি কাঁটা থাকে যাপা ‘কে ঠিক জায়গায় রেখে নিখুঁত ভাবে বল মারতে সাহায্য করে।
মাঠে গল্ফদন্ড বহন করার জন্য গল্ফ ব্যাগ ব্যবহৃত হয়।এতে অনেক পকেট থাকে যেখানে টি, বল বাদস্তানা রাখা যায়। এই ব্যাগ দুচাকার ঠেলাগাড়িতে বহন করা যায় বা গল্ফ কার্টেও বহন করা যায় ।এই ব্যাগ হাতে বা কাঁধেও ঝোলানো যায়। আবার কখনো প্রয়োজন হলে খাড়া করে দাঁড় করিয়ে রাখার জন্য পায়াও আছে।
একটি গল্ফ ক্ষেত্র আসলে অনেকগুলি পরপর গর্তও টি-এলাকার সমাহার। আর এই গর্তও টি-এর মাঝে থাকে ফেয়ার ওয়ে বা ভাল পথ, রাফ বা জঙ্গল, হ্যাজার্ডস বা প্রতিবন্ধকতা আর পাটিংগ্রিন বা সবুজ যা কিনা পতাকাদন্ড দেওয়া গর্তের চারদিকে থাকে ।গোটা ক্ষেত্রে ঘাসের উচ্চতার তারতম্য খেলোয়াড়ের দক্ষতার পরীক্ষা নেয়। অনেক সময় টি এলাকা থেকেই গর্ত সরাসরি দেখা যায়। আবার অনেক সময় ক্ষেত্রের নকশা এমনভাবে করা হয় যে কুকুরের হাঁটুর মত গর্তটি এলাকা থেকে ডানদিকে বা বামদিকে বেঁকে থাকে। কখনো কখনো এই বাঁক দুবার থাকে, যাকে বলে, “double dogleg”।সাধারণতঃ গল্ফ ক্ষেত্রে ১৮ টি গর্ত থাকে । তাই ৯ গর্তের ক্ষেত্রে খেলোয়াড় কে দুবার পাক দিতে হয়।
শুরুর দিকের স্কটিশ ক্ষেত্রগুলির মাঝে বালিয়াড়ি বা ঘাস ছাড়া ন্যাড়াজমি থাকত।
সেই ধারাতেই আজকের গল্ফক্ষেত্র গুলিনির্মিত।
ডান হাতি বা বাঁহাতি খেলোয়াড় লক্ষ্যের যথাক্রমে বাঁদিক বা ডানদিক ফিরে এমনভাবে দাঁড়াবে যাতে শরীরও দন্ড লক্ষ্য রেখার সমান্তরাল হয়। পা সাধারণতঃ কাঁধের সমান দুরত্বে ফাঁক থাকে যদি মাঝারি দৈর্ঘ্যের আয়রন বা পাটার ব্যবহৃত হয়।
আর যদি ছোট দৈর্ঘ্যের আয়রন ব্যবহৃত হয় তাহলে পায়ের ফাঁক কম এবং লম্বা দৈর্ঘ্যের আয়রনও উডের ক্ষেত্রে আরও বেশি হয়।ছোট আয়রনও পাটারের ক্ষেত্রে বলের অবস্থান খেলোয়াড়ের দাঁড়ানোর ভঙ্গির মাঝে হয় এবং ক্রমশঃ সামনের দিকে যেতে থাকে যত দন্ডের দৈর্ঘ্য বাড়তে থাকে। লক্ষ্যের দুরত্বেরও পর নির্ভর করে গল্ফার দন্ড কিভাবে ধরবে, বা কি দন্ড ব্যবহার করবে, বা কত জোরে মারবে।
ড্রাইভ ব্যবহার হয় টি-ক্ষেত্র থেকে লম্বা দূরত্বে মারার ক্ষেত্রে। অ্যাপ্রোচ ব্যবহার হয় লম্বা থেকে মাঝারি পাল্লার মারের ক্ষেত্রে। চিপ ব্যবহৃত হয় তুলনামূলক ছোট দূরত্বে সবুজের চারপাশে মারার জন্য, যাতে বল সবুজে এসে পড়েও যথা সম্ভব গর্তের কাছে যায়। পাট খুব ছোট দূরত্বে সবুজের উপরে মারার জন্য, যাতে বল গর্তে পড়ে।পারের হিসাবে গর্তের শ্রেণী বিভাগ হয়। পার মানে কতবার মেরে একজন দক্ষ গল্ফার টি থেকে গর্তে বল ফেলতে পারে তার হিসাব। যেমন একটি পার চার গর্তে একজন খেলোয়াড়ের দুবার মেরে সবুজে পৌঁছানো উচিত (একে Green in Regulation বা GIR বলে)।একবার টি থেকে “ড্রাইভ” মেরে আর একবার, “অ্যাপ্রোচ” মেরে সবুজেও সব শেষে দুবার “পাট” মেরে গর্তে।গল্ফের গর্ত পার-তিন, -চার, -পাঁচ, কখনো কখনো –ছয়ও কদাচিৎ -সাতের হয়।
আসলে টি থেকে গর্তের দূরত্বই পার এর সংখ্যা ঠিক করে।সাধারণতঃ পার-তিনের ক্ষেত্রে এই দূরত্ব ২৫০ গজ (২২৫মিটার), পার-চারের ক্ষেত্রে এটাই ২৫১ থেকে ৪৭৫ গজ (২২৫-৪৩৪মিটার), আবার পার-পাঁচের ক্ষেত্রে এইদূরত্ব ৪৭৫ গজের (৪৩৫মিটার) বেশি। সচরাচর যদিও পার-ছয়ও –সাত দেখা যায় না; তবে তাদের দৈর্ঘ্য বিরাট – ৬৫০গজেরও বেশি হয়। গল্ফ ক্ষেত্রে রঢালের (চড়াইনা উৎরাই) উপরেও পারসংখ্যা নির্ভর করে ।যদি টি থেকে সবুজের পথ মূলতঃ উৎরাই হয় তবে পার সংখ্যা কম হবে, যদিও দূরত্ব অনুযায়ী পারসংখ্যা বেশি হওয়া উচিত।
আবার উল্টোটাও সত্যি।এ ছাড়া পার সংখ্যা টি থেকে সবুজের মাঝে বাধা-বিপত্তির উপরেও নির্ভর করে। কারণ বাধা বেশি হলে বল বেশি বার মারতে হবে সেই বাধা কাটানোর জন্য।
১৮ গর্তের গল্ফ ক্ষেত্রে চার টি পার-তিন, দশটি পার-চারও চার টি পার-পাঁচ গর্ত থাকতে পারে। তবে এই বিভাজন অন্যরকমও হতে পারে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতা খেলা হয় ৭০,৭১ বা ৭২ পারের ক্ষেত্রে।কোনো কোনো দেশে আবার গল্ফ ক্ষেত্রের বিভাজন নির্ভর করে সেখানে খেলা কতটা কঠিন তারওপর। যাকে গল্ফারের সেই গল্ফ ক্ষেত্রে খেলার প্রতিবন্ধকতা বা হ্যান্ডিক্যাপ বলে।
সবধরনের গল্ফ খেলার মূল উদ্দেশ্য হল যথা সম্ভব কম বার বল মারা। “হোলইনওয়ান” বা “এস” হল যখন একজন গল্ফার টি থেকে বল মেরে একবারে গর্তে ফেলে। বিভিন্ন স্কোরের বিভিন্ন প্রতিশব্দ আছে।
সংখ্যা গত প্রতিশব্দ
কথ্য প্রতিশব্দ সংজ্ঞা
−৪ কন্ডর পারের চেয়ে চার টি মার কম
−৩ অ্যাল বা ট্রাস পারের চেয়ে তিন টি মার কম
− ২ ঈগল পারের চেয়ে দুটি মার কম
− ১ বার্ডি পারের চেয়ে একটি মার কম
E পার পারের সমান
+১ বোগী পারের থেকে এক টি মার বেশি
+২ ডাবল বোগী পারের থেকে দুটি মার বেশি
+৩ ট্রিপল বোগী পারের থেকে তিন টি মার বেশি
+৪ কোয়াড্রুপল বোগী পারের থেকে চার টি মার বেশি
গল্ফ নিয়ে অনেক বিস্তর আলোচনা চলতে পারে তবে আমাদের যাদের সামর্থ রয়েছে তাদের উচিত নিজেকেও পরিবারের সবাইকে নিয়ে নির্মল প্রাকৃতিক পরিবেশে গল্ফকে উপভোগ করা।
প্রতিবেদন : সৈয়দ শাকিল আহাদ
(প্রতিবেদন তৈরীতে তথ্য সহযোগীতাও কৃতজ্ঞতায়, কাইয়ুম রেজা চৌধুরী,মেজর নুরুল মান্নান চৌধুরী (অবঃ)