ঋণের টাকায় ভারতে খেলতে গিয়েছিলেন গলফার বাদল হোসেন। গত ৩ ডিসেম্বর চণ্ডীগড়ে অংশ নেন জিভ মিলখা সিং আমন্ত্রণমূলক গলফ টুর্নামেন্টে। ১৭ ডিসেম্বর জামশেদপুরে খেলেন টাটা স্টিল ট্যুর চ্যাম্পিয়নশিপে। দুটো টুর্নামেন্টেরই প্রাইজমানি ছিল দেড় কোটি করে ভারতীয় রুপি। শুধু দুলাল নন, বাংলাদেশ থেকে ওই দুটি টুর্নামেন্টে খেলেছেন জামাল হোসেন মোল্লা ও মোহাম্মদ সায়েম। প্রায় ১০ মাস পর হঠাৎ টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই কেউ ভালো করতে পারেননি।
দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর থেকে অন্যান্য ফেডারেশনের সঙ্গে খেলাধুলা বন্ধ করে দেয় গলফ। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মেনে কয়েক মাস ধরে মাঠে নিয়মিত খেলা গড়াচ্ছে। ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, আর্চারি, অ্যাথলেটিকস, ব্যাডমিন্টন, বাস্কেটবল, বক্সিং, দাবা, সাইক্লিং, ফেন্সিং, হ্যান্ডবল, জিমন্যাস্টিকস, কারাতে, টেনিস, তায়কোয়ান্দো, ভারোত্তোলন, সাঁতার, টেবিল টেনিস—প্রতিটি ফেডারেশনই কোনো না কোনো টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছে। একমাত্র গলফ ফেডারেশনেরই নেই কোনো কার্যক্রম। অনুশীলনের অভাবে দীর্ঘদিন পর আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে ফিরেও স্কোর দেখে হতাশ গলফাররা।
গলফার জামাল হোসেন মোল্লা করোনা সংক্রমণের শুরুতে তিন মাস কিশোরগঞ্জে নিজের গ্রামে ছিলেন। এরপর ছিলেন গাজীপুরে বোনের বাড়িতে। আপাতত ঢাকায় অলস সময় কাটছে। খেলা নেই, রোজগারও বন্ধ। জামাল চোখেমুখে রীতিমতো অন্ধকার দেখছেন, ‘সংসারের খরচ চালাতে সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছি। কী করব বুঝতে পারছি না। ফেডারেশনের স্যারেরা কবে নাগাদ খেলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেবেন, তা–ও জানি না। তাঁরা অনুমতি দিলেই অনুশীলন শুরু করব।’
ফেব্রুয়ারিতে হওয়ার সম্ভাবনা আছে বাংলাদেশ গেমস। প্রতিটি ফেডারেশনকে দল গড়া ও প্রস্তুতির জন্য এরই মধ্যে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ)। কিন্তু বাংলাদেশ গেমসেও গলফের অংশ নেওয়া অনিশ্চিত। গলফ ফেডারেশনের সমন্বয়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ আবদুল বারী তেমন আভাসই দিলেন, ‘এখন তো ক্লাব টুর্নামেন্টের মৌসুম। কিন্তু কবে নাগাদ খেলা শুরু হতে পারে, এসব নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। বাংলাদেশ গেমস ফেব্রুয়ারিতে শুরু হতে পারে। এ জন্য আমাদের প্রস্তুতি নিতে চিঠি দিয়েছে অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন। কিন্তু গেমসে গলফাররা অংশ নেবে কি না, সেটার ব্যাপারে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’